কন্টেন্ট লোকালাইজেশন কি? কেন দরকার ?

কিভাবে স্থানীয় রীতিনীতি মেনে কন্টেন্ট লোকালাইজেশন করে পাবলিশ করা হলে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা ভিজিটরদের আকর্ষণ করতে এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে আপনি জানেন যে, ব্লগসাইট হল সবচেয়ে ভাল উপায় ভিজিটদের আকর্ষণ ও উপার্জন করার। যত বেশি ভিজিটরদের কাছে আপনার কন্টেন্ট প্রাসঙ্গিক ও আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, ততটাই সার্চ ইঞ্জিনের কাছে আপনার ব্লগসাইটের গ্রহনযোগ্যতা বেশি পাবে, ফলে ব্লগসাইট দ্রুত রাঙ্ক করবে।

আর কন্টেন্ট লোকালাইজেশন করার একটি খুব ভাল উপায় হল আপনার ব্লগ নির্দিষ্ঠ ভাষা বা এলাকার জন্য স্থানীয়করণ করা। অনেক নতুন ব্লগার ভাই-বোন আছেন যারা ব্লগসাইটে বাংলা এবং ইংরেজি মিশ্রিত ভাষায় কন্টেন্ট পাবলিশ করেন। ফলে ভিজিটরসহ সার্চ ইঞ্জিনকে বির্বত করা হয়।

কন্টেন্ট লোকালাইজেশন এর মাধ্যমে আপনি কীভাবে নতুন দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে পারেন সেটাই আজকের আলোচ্য বিষয়।

কন্টেন্ট লোকালাইজেশন বলতে কী বোঝায় এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

আপনার ব্লগসাইট বা কন্টেন্ট ভিজিটরদের স্থানীয় রীতিনীতির কথা মাথায় রেখে পাবলিশ করাকে স্থানীয়করণ বলা হয়। উদাহরণ সহ বলি- আমরা বাংলাদেশী, আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। আমরা অনলাইনে কোন তথ্যের জন্য যখন খোজ করি, তখন সাধারণত বাংলাকেই সিলেক্ট করি তারপর পড়ি এবং বুঝার চেষ্ঠা করি।

এখন, যদি আমাদের সামনে যদি হিন্দি ভাষার কোন কন্টেন্ট আসে নিশ্চয় আমাদের পড়তে বা বুঝতে সমস্যা হবে। কারন- আমরা বাংলাভাষী, আমরা হিন্দি জানি না।

আমরা যখন কোন ব্লগসাইট শুরুর চিন্তা-ভাবনা করি, তখন প্রথমেই আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। টার্গেটেড লোকেশন নির্ধারণ এবং সেই লোকেশনের মানুষগণ স্থানীয় কোন ভাষায় কথা বলে তা নিশ্চিত করতে হবে। সে অনুযায়ী কন্টেন্ট পাবলিশ করতে হবে। আর এটিই হচ্ছে কন্টেন্ট লোকালাইজেশন।

কন্টেন্ট লোকালাইজেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনলাইন জগতে ইংরেজি সবচেয়ে জনপ্রিয় ভাষা। আমরা চাইলে ইংরেজি ভাষায় ও ব্লগসাইট পরিচালনা করতে পারি।

কিভাবে কন্টেন্ট লোকালাইজেশন করবেন?

ব্লগসাইট শুরুর পূর্বে পরিকল্পনা করুন, লোকেশন টার্গেট করুন। সেই লোকেশনের লোকজন কোন ভাষায় কথা বলে তা খতিয়ে দেখুন। কারন- আপনি যে ভাষায় ব্লগসাইট শুরু করবেন তা আমেরিকার জন্য প্রযোজ্য হলে জাপান, হল্যান্ড বা পোল্যান্ড কার্ন্ট্রির জন্য নাও হতে পারে।

যেমন হল্যান্ডের ক্ষেত্রে এটি নাও প্রয়োজনীয় হতে পারে, কারণ সেখানে ৮৭% লোকজন ইংরেজি জানেন। কিন্তু, পোল্যান্ডে ৯৫% লোকজন স্থানীয় ভাষার কন্টেন্ট পছন্দ করেন।

অটো-ট্রান্সলেটর ব্যবহার করবেন না

হয়তো বা ভাবছেন যে আপনারা চায়না ভাষায় ব্লগ করবেন। এখন আপনারা চালাকি করতে পারেন যে ভাই, আমি তো কন্টেন্ট বাংলা বা ইংরেজি ভাষায় লিখে তা ট্রান্সলেট করে নির্দিষ্ট কোন ভাষায় প্রকাশ করতে পারি😀 🙂

মনে রাখবেন:- অনলাইন ট্রান্সলেটর দৈনন্দিন কাজের জন্য উপযুক্ত হলেও, স্থানীয় ভাষাভাষী দর্শকদের জন্য কন্টেন্ট অনুবাদের কাজে সেগুলি ব্যবহার করলে তা অর্থবহ কন্টেন্ট পাওয়া যাবে না। ট্রান্সলেট করা কন্টেন্ট সাবলীল হবে না কিংবা অনুপযুক্ত শব্দ ব্যবহারের মতো খারাপ কিছুও ঘটতে পারে।

কারন ট্রান্সলেটর ছোট বাক্য বা নির্দিষ্ঠ কোন শব্দের অর্থ প্রদানের জন্য যথেস্ট ভাল হলেও বড় বাক্যে বা অনুছ্যেদে তা সঠিত অর্থ প্রদান করে না। ট্রান্সলেটর সর্বদা কাছা-কাছি বা সমমানের অর্থ প্রদান করে।

ট্রান্সলেটর প্লাগিন/সফটয়ারের ব্যবহার

শত নিষেধ/বিপত্তি সত্তেও কিংবা শখের বসে হলেও আমরা অনেকে ব্লগসাইটে ট্রান্সলেটর প্লাগিন/সফটয়ার ব্যবহার করে থাকি। এই সিরিয়ালে আমিও আছি🙂🙂। আপনারা আমার এই ব্লগসাইটের মেনুবারে থাকা ট্রান্সলেটর ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাষায় ব্লগ পড়তে পারবেন।

ট্রান্সলেটর প্লাগিন/সফটয়ারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা আপনার ব্লগ ব্রাউজ করার সময় সহজে ও দ্রুত নিজের অভিরুচি অনুযায়ী ভাষা বাছাই করে পড়তে পারবেন অথবা আপনার সাইটের মেনুতে ব্যবহৃত ভাষা কাস্টমাইজ করতে পারবেন।

তবে ট্রান্সলেটর প্লাগিন/সফটয়ার 100% সঠিক আউটপুট দেয় না। আপনারা ব্যবহার করলে সতর্কতার সহিত ব্যবহার করুন।

ট্রান্সলেটর প্লাগিন/সফটয়ারের লিস্ট

  1. Weglot
  2. Lokalise
  3. Polylang
  4. WPML
  5. Automatic Translator with Google Translate
  6. Lingotek Translation
  7. Google Language Translator
  8. Google Website Translator
  9. Babble
  10. MultilingualPress
  11. Loco Translate
  12. TranslatePress
  13. GTranslate

স্থানীয় কোনও ব্যক্তির সহায়তা নিন

আপনি যদি পাক্কা প্লান করে ফেলেন যে, আমি বাঙ্গালী হলেও চাইনিজ ভাষায় ব্লগসাইট শুরু করবো🙂। তাহলে স্থানীয় কোনও উপযুক্ত ব্যক্তিকে কন্টেন্ট লোকালাইজেশন এর দায়িত্ব দিলে তিনি শুধু সঠিক অনুবাদ করবেন তাই নয়, তিনি সেই অঞ্চলের সংস্কৃতি ও রীতিনীতি মেনে আপনি যাদের টার্গেট করতে চান তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ও বোঝার মতো কন্টেন্ট তৈরি করবেন।

আর এটি কন্টেন্ট লোকালাইজেশন এর সর্বাপেক্ষা গ্রহনযোগ্য পদ্ধতি।

SEO সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক পদ্ধতি মেনে চলুন

যেহেতু শীঘ্রই আপনার ওয়েবসাইটে আলাদা ভাষা ও লোকেশনের জন্য কন্টেন্ট প্রকাশ হবে, সেই জন্য SEO সংক্রান্ত এই আন্তর্জাতিক পদ্ধতি মেনে চলতে ভুলবেন না। যেমন, আপনার সাইটের কোন ভার্সন দেখাতে হবে সেটি Google যাতে সহজে বুঝতে পারে সেই জন্য hreflang ট্যাগ ব্যবহার করুন।

মন্তব্য

কন্টেন্ট লোকালাইজেশন এখন সমসাময়ীক বিষয়। সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায়/প্রথম স্থান অধিকারে এর ভূমিকা অপরিসীম। সুতরাং এবিষয়ে আমাদের গুরুপ্ত প্রদান করতে হবে।

সোর্স:- google.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
× How can I help you?