গুগল এডসেন্স অনুমোদন না হওয়ার কারণ সমুহ

বর্তমান সময়ের অনেক ভালমানের ব্লগার আছেন যারা বার বার গুগল এডসেন্স পাওয়ার আবেদন করে অনুমোদন করতে না পেরে অনেকে হতাশ হচ্ছেন। কিছু লোক চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছে আবার অনেকে কিছুতেই ব্যর্থতাকে মেনে নিতে পারছে না।

যারা বার বার আবেদন করেও গুগল এডসেন্স পাচ্ছে না তাদের জন্য গুগল এডসেন্স অনুমোদন না হওয়ার কারণ সমুহ শেয়ার করছি। আশা রাখছি এগুলো নিশ্চয় আপনার ব্লগের ভূল গুলোকে সংশোধন করতে সাহায্য করবে।

. ব্লগের বয়স

গুগল এডসেন্স এ আবেদন করার পূর্বে আপনার ব্লগের/ওয়েব সাইটের বয়স কমপক্ষে 2 মাস হওয়া ভাল। বিশেষ করে এশিয়া মহাদেশের কোন জায়গা থেকে আবেদন করার জন্য ব্লগের বয়স 2 মাস পূর্ণ না হওয়া অবধি আবেদন করাই সম্ভব হয় না।

কাজেই ব্লগের বয়স 2 মাস পূর্ণ হওয়ার পরে গুগল এডসেন্স এর জন্য আবেদন করা উচিত।

২. স্বল্প কনটেন্ট

একটি ব্লগের জন্য কনটেন্ট হচ্ছে তার প্রাণ। আপনার ব্লগে যত বেশি কন্টেন্ট থাকবে তত বেশী ভিজিটর পাবেন। এডসেন্স এ আবেদন করার পূর্বে আপনার ব্লগে কমপক্ষে ৩০/৪০ টি ভালমানের ইউনিক পোষ্ট থাকতে হবে।

ব্লগের প্রত্যেকটি ক্যাটাগরীতে কমপক্ষে ৫ টি করে পোষ্ট হতে হবে। কারণ গুগল এডসেন্স কর্তৃপক্ষ আপনার ব্লগটিকে অনুমোদন করার পূর্বে ভাল ভাবে যাচাই করে দেখবে ব্লগের পর্যাপ্ত পরিমানে কনটেন্ট আছে কি না।

৩. মানসম্মত কনটেন্ট

ব্লগে শুধুমাত্র শত শত কনটেন্ট থাকলেই হবে না, কন্টেন্ট গুলো অবশ্যই ভাল মানের হতে হবে। আপনি যদি ব্লগিং ‍শুরু করার পূর্বে মনে করে থাকেন যে, ভবিষ্যতে আপনার ব্লগে গুগল এ্যাডসেন্স ব্যবহার করতঃ অনলাইন থেকে আয় করিবেন।

তাহলে অবশ্যই এমন বিষয় নিয়ে লিখা শুরু করবেন যা বিষয় ভিত্তিক এবং সার্চ ইঞ্জিনসহ সকল ধরনের মানুষের প্রয়োজন হয়। আপনার ব্লগে যখন মানসম্মত কনটেন্ট থাকবে তখন ব্লগটি সবার কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাবে।

৪. ইউনিক কনটেন্ট

গুগল এ্যাডসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কমন ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো ইউনিক কন্টেন্ট। এই বিষয়টির ভিতরের তাৎপর্য কেউ ই ভাল ভাবে বুঝতে চান না বা বুঝতে সক্ষম হন না। অনেকের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয় না যে, আসলে ইউনিক কনটেন্ট বলতে কি?

বেশীরভাগ লোকই মনেকরে কারও ব্লগ থেকে কপি করা কনটেন্ট ব্যবহার না করলেই সেটি ইউনিক কনটেন্ট হয়।

মূলত ইউনিক কনটেন্ট পরিপূর্ণ অর্থ এ ভাবে হচ্ছে না। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই আপনার ব্লগের প্রত্যেকটি পোষ্ট অন্যের ব্লগ থেকে কপি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ইউনিক কনটেন্ট বলতে সেটাকে বুঝাবে, যেটির বিষয়বস্তু অন্য কারও সাথে কোন ভাবেই মিলছে না।

এখন আপনি হয়ত বলবেন আমি যেহেতু কারও কোন কনটেন্ট কপি করিনি তাহলে কথাত এটাই হচ্ছে। এ জন্য আমি বিষয়টি উদাহরনের মাধ্যমে আরও পরিষ্কার করছি।

ইউনিক বলতে কেবল ঐ বিষয়টাকে বুঝাবে যেটি কারও সাথে কোনভাবেই মিলে না। আপনি যদি ২০/২৫ ইউনিক কনটেন্ট শেয়ার করতে পারেন তাহলে এডসেন্স একাউন্ট অনুমোদন হবেই হবে।

৫. অনুপযুক্ত কনটেন্ট

কিছু কনটেন্ট রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করা গুগল এডসেন্স কনটেন্ট পলিসি এর বাহিরে। যেগুলোর ব্যবহারে সাধারণ মানুষ বিব্রত হতে পারে। এ ধরনের কনটেন্ট ব্যবহার করে যত ট্রাফিক পান না কেন আপনার ব্লগে এডসেন্স অনুমোদন হবে না। নিচে দেখুন-

  • পর্ণগ্রাফি/এডাল্ট কনটেন্ট,
  • হ্যাকিং বা ক্রাকিং টিপস,
  • থার্ড পার্টি ভিডিও শেয়ারিং ব্লগ,
  • বিভিন্ন মাদক জাতীয় দ্রব্যের প্রচার,
  • এলকোহল দ্রব্যের প্রতি আকৃষ্ট করা,
  • পরস্পর বিরোধী কনটেন্ট,
  • মারাত্মক অস্ত্রের বিজ্ঞাপন,
  • মনুষত্ব বিকৃত হয় এমন কিছু।

৬. পর্যাপ্ত ভিজিটর

আপনার ব্লগ সাইটে যদি একদম কোন ট্রাফিক না থাকে তাহলে এডসেন্স অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। ব্লগে যখন পর্যাপ্ত পরিমানে অর্গানিক ট্রাফিক থাকবে তখন খুব সহজেই এ্যাডসেন্স অনুমোদন হবে। কারন গুগল মামু চায় এমন কাউকে এ্যাডসেন্স একাউন্ট দিতে যার ব্লগের মাধ্যমে তারা ভিজিটরদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে লাভবান হতে পারে।

আপনি যখন ভাল ভাবে এসইও ফ্রেন্ডলী ইউনিক কনটেন্ট পাবলিশ করবেন তখন ট্রাফিক অটোমেটিক বাড়তে থাকবে। তবে একটা ব্যাপার মনে রাখবেন কোন প্রকার অসাধু উপায়ের মাধ্যমে ভিজিটর বৃদ্ধি করে কোন লাভবান হতে পারবেন না। যখন কোন প্রকার সোসাল মিডিয়া ছাড়া শুধুমাত্র গুগল হতে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিজিটর পাবেন তখন গুগল আপনাকে সহজে অনুমোদন করবে।

গুরুপ্তপূর্ন:- এসইও কি ? কিভাবে এসইও শিখবো ? বিস্তারিত

৭. ব্লগ ডিজাইন

উদাহরন দেইঃ- আপনি যখন কোন ব্যবসা শুরু করবেন। তখন নিশ্চই আপনার দোকান বা ব্যবসার জায়গাটি ভালভাবে সাজিয়ে চক-চকে করে নেবেন। তারপর ব্যবসা করার প্রয়োজনীয় উপকরন দোকানে সাজিয়ে-গুছিয়ে বসাবেন। ব্লগের বিষয়টি ঠিক একই রকম। এটাও একটি অনলাইন বিজনেস।

আপনার ব্লগটি যদি ভাল ডিজাইন না হয় এবং এডসেন্স এর এডস কোড বসানোর মত পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে তাহলে কিছুতেই এ্যাডসেন্স অনুমোদন করবে না। 

কারণ আপনার ব্লগের প্রয়োজনীয় জায়গায় বিজ্ঞাপন বসিয়ে পরিষ্কার ভাবে ভিজিটরদের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করাতে ব্যর্থ হলে তাদের কোন লাভ হবে না। কাজেই ব্লগের ডিজাইন অবশ্যই রেসপন্সিভ, স্বচ্ছ, ইউজার ফ্রেন্ডলী এবং এডসেন্স এডস ব্যবহারের উপযোগী হতে হবে।

৮. টপ লেভেলের ডোমেইন

এখনকার সময়ে গুগল এডসেন্স অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে ডোমেইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক সময় ছিল যখন ব্লগস্পট.কম দিয়েও খুব সহজে এডসেন্স অনুমোদন সম্ভব হত, কিন্তু সম্প্রতি গুগল আপডেটের কারনে এ বিষয়টি বেশ কঠিন হয়ে গেছে।

কাজেই বিষয়টি সহজ করার জন্য ব্লগিং শুরু করার পূর্বে একটি ভালমানের কাস্টম ডোমেইন কিনে নেওয়া উত্তম হবে।

আরো পড়ুন:- সহজে গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায়

এডসেন্স না পাওয়ার আরোও কিছু টিপস

এ ছাড়াও গুগল এডসেন্স অনুমোদন না হওয়ার আরও বেশ কিছু ছোট-খাট কারণ রয়েছে। যেগুলো সম্পর্কে এখন বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব নয়। নিচে আমি সংক্ষেপে বিষয়গুলি তুলে ধরছি।

  • Evil সাইটে ব্লগের লিংক করা থাকলে,
  • সাইট Malware এ আক্রান্ত হলে,
  • ব্লগটির প্রকৃত মালিক নিজে না হলে,
  • ব্লগের Navigation সহজে বুঝা না গেলে,
  • বাচ্ছাদের Privacy Protection Act এর বহিঃভূত হলে,
  • ব্লগের কনটেন্টের ভাষা সাপোর্ট না করলে,
  • পূর্বে কখন AdSense Account ব্যান হলে,
  • সঠিকভাবে AdSense Policy অনুসরণ না করলে,
  • আবেদনকারীর বয়স ১৮ বৎসর না হওয়া।

1 thought on “গুগল এডসেন্স অনুমোদন না হওয়ার কারণ সমুহ”

  1. Pingback: হাই সিপিসি পাওয়ার উপায় | পর্যালোচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
× How can I help you?